জাতীয়
সংস্কার অভাবে মনিরামপুরের ফকিরের ব্রীজটি অবশেষে নদী গর্ভে বিলীন
এ কে আজাদ, মণিরামপুর ॥
অবশেষে সংস্কারের অভাবে মনিরামপুরের ফকিরের ব্রীজটি নদীগর্ভে বিলীন হলো। এটি উপজেলার যশোর সাতীরা মহাসড়কের ফকিররাস্তা সংলগ্ন হরিহর নদীর উপর দীর্ঘদিন যাবৎ জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে ছিল। ব্রীজটি গোলাম আলী ফকির ব্রীজ নামে পরিচিত। কয়েকদিন আগে ব্রীজটি একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে। এর ফলে গোটা এলাকায় সর্বসাধারনকে নদী পারাপারে চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। উপায়ান্তর না পেয়ে এলাকাবাসী পারাপারের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে নিয়েছে। কয়েক গ্রামের স্কুল-কলেজগামী কোমলমতী শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় বাঁশের সাঁকো পার হতে হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার যশোর-সাতীরা মহাসড়কের ফকিররাস্তা সংলগ্ন নাগোরঘোপ গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া হরিহর নদীর উপর জনকল্যানে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কেশবপুর উপজেলার বেলোকাটি গ্রামের জনৈক পীর গোলাম আলী ফকির একটি ব্রিজ নির্মান করেন। ব্রীজটি ২০/২৫ বছর যাবত যারপরনাই জরাজীর্ণ ছিল। গত কয়েক দিন আগে ব্রীজটি সম্পূর্ণ রূপে ভেঙ্গে পড়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওই এলাকার ১০টি গ্রামের মানুষ ভাঙ্গা ব্রীজের পার্শ্বে নদীর উপর স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে সন্তানদের লেখাপড়া, হাট বাজারসহ দৈনন্দিন সকল কাজ কর্ম করে চলেছেন কোন রকম। ইতিপূবে ওই জরাজীর্ণ ব্রীজ থেকে পড়ে স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন কোন না কোন পথচারী পড়েছে নদীগর্ভে। ব্রীজ সংলগ্ন অধিবাসী ও নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক ইউনুস আলী বলেন, “আমার জানামতে এই ব্রীজের উপর থেকে পড়ে প্রায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়ে হাত-পা ভেঙ্গে পঙ্গু হয়ে আছে। মুজগুন্নী গ্রামের আমিনুল শেখ, ডাঃ শফিকুল ইসলাম, বাটবিলা গ্রামের শিক্ষার্থী আঃ রাজ্জাক, হাসাডাঙ্গা গ্রামের গৃহবধূ রাবেয়া বেগম, রতনদিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম মারাত্মক আহত হয়ে জীবনের তরে পঙ্গু হয়ে গেছে। কেশবপুর আলিয়া মাদ্রাসার প্রাক্তন মুহাদ্দিস মাও: আব্দুল জলিল বলেন, “ব্রীজটি এতই জনগুরুত্বপূর্ণ যে, মণিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর ও কলারোয়া উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন কোন না কোন কাজে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় নাগোরঘোপ প্রাইমারী স্কুল, হাইস্কুল, চিনাটোলা, মনিরামপুর ও কেশবপুর কলেজ-মাদ্রাসার শত-শত শিার্থী প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে। কিন্তু দূর্ভাগ্য ব্রীজটি সেই বেহাল অবস্থায়ই পড়ে থেকে অবশেষে তা ভেঙ্গে পড়লো নদী গর্ভে। স্থানীয় শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মশিউর রহমান বলেন , “ ব্রীজটি নির্মান করা ছিল ,ওই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী, পরিষদের পক্ষ থেকে এটি নির্মান করা অসম্ভব। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন জানিয়েছি”। স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন,”ব্রীজটি নির্মানে আন্তরিকতার কোন অভাব নেই। অচিরেই ব্রীজটি নির্মান করা হবে।